সামনে ৪৫তম বিসিএস লিখিত এক্সাম, লিখিত যারা দেয় তাদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন থাকে- যেমন, এক পেইজে ক’লাইন লিখলে সেটা পার্ফেক্ট ধরা যায়, কয় মিনিটে এক পেইজ লেখা স্টান্ডার্ড? এক্সাম হলে যে খাতা দেয় সেগুলো কিরকম বা পরীক্ষায় টাইম ম্যানেজমেন্ট কেমন হলে ভালো হয়? এরকম অনেক কিছুই নতুনরা জানতে চায়, এসম্পর্কে অল্পকিছু কথা আজকে শেয়ার করবো।
বিসিএস লিখিত এক্সামে পিএসসি যে খাতা সরবরাহ করে তা হলো হলদে কর্ণফুলী কাগজের লিগ্যাল সাইজ পেইজ, খাতার দৈর্ঘ্য ১২-১৪ ইঞ্চি, প্রস্থ ৭-৮ ইঞ্চি (প্রায়)। খুঁজলে নীলক্ষেতে এই খাতা কিনতে পারবেন, আমার এক্সামের আগে আমি অনেক খুঁজে এই খাতায় প্র্যাক্টিস করতাম, যাতে এক্সাম হলে টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে পারি বা লেখাটা স্মুথলি লিখতে পারি৷
প্রায় প্রতিটা পরীক্ষায় ০৫ মার্কের একটা প্রশ্নের জন্য আপনি ০৬ মিনিট সময় পাবেন। আপনি যদি এক মিনিটে ২০ ওয়ার্ড লিখতে পারেন তাহলে ০৬ মিনিটে ১২০ ওয়ার্ড, বা মিনিটে সর্বোচ্চ ২৫ ওয়ার্ড লিখলে ০৬ মিনিটে ১৫০ ওয়ার্ড লেখার সময় পাবেন।
আপনি বাসায় বসেই অনেক প্র্যাক্টিসে মিলায়ে নিবেন যে, এক মিনিটে আপনি কয়টা ওয়ার্ড লিখতে পারেন।
তারপর, লিগ্যাল সাইজের পিএসসি’র অনুরূপ ঐ পেইজে ০৫ মার্কের একটা প্রশ্নের উত্তরে কতোটুকু যায়গা লিখতে লাগে, তা জেনে নিবেন এবং পরীক্ষার হলে এপ্লাই করবেন। এরকম করলে টাইম ম্যানেজমেন্টের জন্য এক্সাম হলে আপনাকে বারবার ঘড়ি দেখতে হবে না, এমনিতেই বরাদ্দকৃত সময়ে আপনার লেখা হয়ে যাবে।
লেখার ক্ষেত্রে মনে রাখবেন, গাদাগাদি করে যে জিনিস এক পেইজে লেখা যায়, তারচেয়ে একটু ফাঁকা করে সেই জিনিস দেড় পেইজে লেখা অনেক ভালো। তারমানে হলো, এক্সাম হলে ০৫ মার্কের একটা প্রশ্নের উত্তরে দেড় পেইজ লেখাটাই মোটামুটি মানের স্টান্ডার্ড।
এরচেয়ে বেশি যারা লেখে, হয় তারা খাতার চারপাশে মার্জিন দিয়ে লেখে, বেশি ফাঁকা ফাঁকা করে লেখে, আর না হয় তাদের হাতের লেখা বগের ঠ্যাঙ। তবুও, এরচেয়েও অনেকে বেশি লিখতে পারে, তবে সেটা হাজারে একজন হবে কি-না সন্দেহ।
লিখিত এক্সাম দিতে গিয়ে আপনাকে মনে রাখতে হবে, টাইম ইজ দ্য মোস্ট ইম্পরট্যান্ট থিংস টু এপ্লাই- এক্সাম হলে আপনাকে এমনভাবে টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে হবে, যাতে নির্দিষ্ট সময়ে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর আপনি সুন্দরমতো লিখতে পারেন। অনেককেই দেখেছি, যারা বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক বা অন্যান্য পরীক্ষায় ১০/২০/৩০ বা তারও বেশি মার্কের প্রশ্ন ছেড়ে দিয়ে আসে, সময়ের অভাবে। এরকম হলে আপনার ক্যাডার হবার আশা অনেকটাই ম্লান হয়ে যায়। তাই আপনাকে প্রত্যেকটা প্রশ্নই সময়মতো লিখে শেষ করতে হবে৷ এজন্য আপনার নিজের থেকে একটা স্ট্র্যাটেজি ফলো করা দরকার, যা আপনি এক্সামের অনেক আগে থেকেই প্র্যাক্টিস করবেন।
আর যেটা করা দরকার- হাতের লেখা অনেক ফাস্ট করা৷ এরজন্য আমি যেটা করতাম, এক্সামের মাসখানেক আগে থেকেই প্রত্যেকটা দিন ৩০-৫০ মিনিট খাতায় একটানা লিখে যেতাম, এতে হাতের লেখা মোটামুটি দ্রুত হয়েছিলো। কিছু বিষয় মুখস্থ থাকতো, যেমন ছয়দফা, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বা সংবিধান ইত্যাদি। এগুলোই প্রত্যেকদিন হরদম লিখতাম টাইম ম্যানেজমেন্ট ঠিক রাখার জন্য আর হাতের লেখা দ্রুত করার জন্য।
আসাদুল্লাহ আল গালিব
৪১তম বিসিএস,
সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার (সুপারিশপ্রাপ্ত)।