সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে অনেক দিন ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়ে আসছেন। এ ছাড়া এ দাবিতে প্রায়ই বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নামে শিক্ষার্থীরা বা চাকরিপ্রত্যাশীরা মানববন্ধনও করেন। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের এ দাবি এবার আমলে নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশ করেছে শিক্ষা বিষয়ক গণমাধ্যম দি ডেইলি ক্যাম্পাস ।
চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীরা গত প্রায় ১১ বছর ধরে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলন করছে।
তারা বলেন, দীর্ঘ সময়ের এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসঙ্গতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণর কথা বলা হলেও সরকার এ বিষয়ে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
কর্মসূচি চলমান আছে জানিয়ে শরিফুল হাসান বলেন, আগামীকাল বুধবার (০১ মে) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাষ্কর্যে আমাদের সংবাদ সম্মেলন রয়েছে। দাবির বিষয়ে আমাদের যোগ্যতা ও কর্তৃপক্ষের অবস্থান নিয়ে সেখানে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
চাকরিপ্রার্থীদের দাবির বিষয়টি উপলব্ধি করে বিষয়টি আমলে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। চাকরি আবেদনের ৩৫ বছর করতে একটি চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের মঙ্গলবার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সম্প্রতি এই চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে এটা মন্ত্রণালয়ের কোনো সিদ্ধান্ত নয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারি- বেসরকারি, আধা সরকারি, রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান ও স্বায়ত্তশাসিতসহ বাংলাদেশে বিদ্যমান সব ধরনের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছরকে মানদণ্ড হিসেবে অনুসরণ করা হয়। এ অবস্থায় চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ৩৫ বছর করার দাবির বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে পাতা নম্বর ৩৩-এর শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে ‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তি সংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
বিশ্বের অনেক দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৫৫ বছর পর্যন্ত রয়েছে। এমনকি কোথাও কোথাও ৫৯ বছর পর্যন্ত। এ ছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০, শ্রীলঙ্কায় ৪৫, ইন্দোনেশিয়ায় ৩৫, ইতালিতে ৩৫, ফ্রান্সে ৪০। এমনকি অনেক দেশে আগ্রহী ব্যক্তিরা অবসর গ্রহণের ঠিক আগের দিনও সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে পারেন।